
সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল (৩১ অক্টোবর ১৮৭৫ – ১৫ ডিসেম্বর ১৯৫০) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় পণ্ডিত ও জাতীয়তাবাদী নেতা, যিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও স্বাধীন ভারত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। “লৌহমানব” উপাধি দিয়ে তাকে সম্বোধন করা হয়। স্বাধীন ভারতের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও তিনি নিজস্ব অবদান রেখেছেন।
জন্ম ও পরিবার
প্যাটেল গুজরাতের কুর্মী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন ঝাঁসির রানির সেনাবাহিনীতে এবং মা ছিলেন অত্যন্ত আধ্যাত্মিক। ১৮৯১ সালে তিনি বিয়ে করেন এবং এই দম্পতির দুটি সন্তান হয়। কন্যা মণিবেন প্যাটেল একজন কর্মী এবং পুত্র দহিয়াভাই প্যাটেল ভারতের সংসদ সদস্য ছিলেন।
শিক্ষা জীবন
শিক্ষা জীবন শুরু হয় স্থানীয় গুজরাতি স্কুলে, পরে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। তুলনায় বেশি বয়সে তিনি উচ্চ বিদ্যালয় পাশ করেন এবং আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে যান। ১৯৩৩ সালে তিনি ইনস অফ কোর্ট থেকে আইন বিভাগে ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। ভারতের গোধরায় তিনি আইন অনুশীলন শুরু করেন এবং ব্রিটিশ সরকারের লাভজনক পদ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
কর্মজীবন
শিক্ষা শেষ করার পর প্যাটেল একজন আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে ১৯১৭ সালে গুজরাত শাখার সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। তিনি কৃষকদের কর আন্দোলন, বারদোলি ও লবণ সত্যাগ্রহ, ভারত ছাড়ো আন্দোলন ইত্যাদিতে নেতৃত্ব দেন। দেশভাগ ও স্বাধীনতার পর ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
গান্ধীর প্রভাব
প্যাটেলের রাজনীতি ও চিন্তাভাবনার উপর গান্ধীর গভীর প্রভাব ছিল। তিনি গান্ধীর নীতি ও আদর্শের প্রতি অটল সমর্থন রাখতেন এবং দেশের জন্য তার নির্দেশনা মেনে চলতেন।
সম্মাননা
তার স্মরণে গুজরাতে নির্মিত হয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ ভাস্কর্য স্ট্যাচু অফ ইউনিটি। এছাড়াও তার নামে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে এবং তার জন্মদিন রাষ্ট্রীয় একতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ভারতরত্নও তিনি পেয়েছেন।
