
কামিনী রায় (জন্ম: ১২ই অক্টোবর ১৮৬৪ – মৃত্যু: ২৭শে সেপ্টেম্বর ১৯৩৩) ছিলেন একজন বাঙালি কবি, সমাজকর্মী ও নারীবাদী চিন্তাবিদ। তিনি ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক ডিগ্রিধারী, যিনি সংস্কৃত ভাষায় সম্মানসহ স্নাতক হন। নিজের মেধা ও সাহসিকতায় তিনি নারীর শিক্ষার পথ উন্মুক্ত করেছিলেন।
শিক্ষা ও কর্মজীবন
শৈশব থেকেই তাঁর পিতা চণ্ডীচরণ সেন তাঁকে শিক্ষার পথে এগিয়ে দেন। বেথুন স্কুল ও কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীকালে বেথুন কলেজেই অধ্যাপনা শুরু করেন এবং নারীশিক্ষা ও সমাজে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেন। তিনি নারী শ্রম তদন্ত কমিশনের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
সাহিত্য ও অবদান
মাত্র আট বছর বয়স থেকেই লেখালেখি শুরু করেন কামিনী রায়। তাঁর কবিতায় জীবনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা ও নারীর আত্মমর্যাদা ফুটে ওঠে। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে আলো ও ছায়া, নির্মাল্য, গুঞ্জন, অশোক সঙ্গীত,দীপ ও ধূপ। তিনি তরুণ লেখকদেরও উৎসাহ দিতেন—কবি সুফিয়া কামাল তাঁর অনুপ্রেরণায় লেখালেখি শুরু করেন।
সম্মাননা
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ‘জগত্তারিণী পদক’ প্রদান করে সম্মানিত করে। তিনি বঙ্গীয় লিটারারি কনফারেন্সের সভাপতি এবং বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতিও ছিলেন।
কামিনী রায় আজও অনুপ্রেরণার প্রতীক—তিনি দেখিয়েছেন, শিক্ষা ও সাহিত্য সমাজ বদলের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।
