
সৌরজগতের গ্রহ নক্ষত্র অনুযায়ী পৃথিবীতে ১৫ দিন অমাবস্যা ১৫ দিন পূর্ণিমা। একটি ছন্দের মাধ্যমে চলতে থাকে এই প্রক্রিয়া। এই অমাবস্যা ও পূর্ণিমা নিয়ে হিন্দুদের বিভিন্ন বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হয়। অমাবস্যা ও পূর্ণিমা হিন্দুদের জন্য একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন। হিন্দুদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মালম্বীরা ও পূর্ণিমা-অমাবস্যা দেখে বিভিন্ন উৎসবের সময়সূচী পালন করে থাকেন। যেমনঃ মুসলমানরা তাদের ঈদ ও কোরবান পালন করে থাকেন এবং বৌদ্ধরা বুদ্ধ পূর্ণিমা, আষাঢ়ী পূর্ণিমা, মধু পূর্ণিমা, প্রবারণা পূর্ণিমা, ফাল্গুনী পূর্ণিমা।
তেমনি অমাবস্যাতে ও কিছু বিধি-নিষেধ, নিয়ম-কানুন রয়েছে।
হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হল অমাবস্যা ও পূর্ণিমা। শুভ এবং অশুভ সাথে এই দুইদিন প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যুক্ত। হিন্দুধর্ম অনুসারে অবশ্যই তিথি নিয়ে নানা ধরনের রীতি-নীতি নিয়ম-কানুন প্রচলিত রয়েছে আমাদের মধ্যে। এই সব নিয়ম কিছু অঞ্চল বা প্রদেশ হিসাবে আলাদা হয়। আবার কিছু নিয়ম রয়েছে, যা পুরো বিশ্বেই এক ভাবে মেনে চলা হয়। আজকে আসুন জেনে নেই এমন কিছু নিয়মের কথা, যা প্রতি অমাবস্যা এবং পূর্ণিমা তিথিতে মেনে চলতে হয় আমাদেরকে।
পূর্ণিমা-অমাবস্যাতে কী কী করা উচিত ও কী কী করা উচিত নয় চলুন জেনে নেইঃ
১) চুল এবং নখ কে তন্ত্র অনুসারে শরীরের নদীর অংশ বলে মনে করা হয়। পূর্ণিমার দিন যেহেতু জীবন-প্রবাহ খুবই উঁচু অবস্থায় থাকে, তাই মনে করা হয় যে পূর্ণিমার দিন চুল কাটা যাবে না, অপরদিকে অমাবস্যার দিন যেহেতু মানুষের জীবন খুবই নিম্নমুখী অবস্থায় থাকে, তাই সেদিন নখ কাটা যাবে না।
২) অমাবস্যা তিথিতে অশুভ শক্তির প্রভাব প্রচন্ড পরিমানে সক্রিয় থাকে।এই অশুভ শক্তির প্রভাব কাটানোর জন্য বাড়ির মূল দরজার সামনে দুটি তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালাতে হয় প্রতিটি মানুষকে। এই প্রদীপ জ্বালালে বাড়ি থেকে সমস্ত অশুভ শক্তির ধ্বংস ও নিঃশেষ হয়।
৩) পূর্ণিমার দিনের মতো অমাবস্যার দিনে ও ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখতে হয়। বাড়িতে কোন রকম যাতে এঁটো থালা-বাসন না থাকে, সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হয়।ঘরদোর ভালো করে মুছে দিয়ে চৌকাঠ ভালো করে ধুঁয়ে দিতে হয়।
৪) অমাবস্যার দিন খুব বেশি দূরে যাত্রা করা ঠিক নয়। মধ্যযুগে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে অমাবস্যায় দূর দেশের কাজকর্ম গুলো স্থগিত করে রাখা হতো।
৫) অনেকেই পূর্ণিমা এবং ভালোবাসার দিন উপোবাস করেন। পুরোপুরি উপোবাস না করলেও অনেকে এই দিন আমিষ খাবার ত্যাগ করে নিরামিষ আহার গ্রহণ করেন।
৬) ভালোবাসার দিন ভগবানের উপাসনা করা প্রয়োজন। যদিও মন্দিরে যেতে না পারলে বাড়িতে বসে ভগবানের উপাসনা করুন।
৭) হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে , অমাবস্যা তিথিতে কোনভাবে গর্ভধারণ করা অশুভ বলে মনে করা হয়। অমাবস্যা তিথি ছাড়াও চতুর্থ,ষষ্ঠ এবং অষ্টম চতুর্দশী পূর্ণিমা তিথিতে গর্ভধারণ অশুভ বলে ধর্মীয় শাস্ত্রে বিধান রয়েছে।
তথ্যসূত্র
উইকিপিডিয়া